ডায়াবেটিস আমাদের সবার পরিচিত এক রোগ। বাংলাদেশে প্রায় ৯০ লাখ এবং সারাবিশ্বে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আশির দশকে দেশে মাত্র দুই শতাংশ রোগী থাকলেও এখন তা প্রায় ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের ধারণা ডায়াবেটিস একটি দূরারোগ্য রোগ এবং এটি হলে সারাজীবন ঔষধের উপর ভরসা করে চলতে হবে। কিন্তু আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে কিছু পাতা, শাকসবজি ও ফলের নাম পাওয়া যায় যা ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকরী। এগুলো রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে শরীরকে ইনসুলিনের প্রয়োজনীয় মাত্রায় ব্যবহার করতে সহায়তা করে।
বেরি
পাতা (Berry
leaf):
ভারত, ব্রিটেন ও আমেরিকার গবেষণায় জানা যায় বেরি পাতায়
মাইরিলিন নামক উপাদান থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সকালবেলা ৪ - ৫ টা বেরি পাতা পিষে খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাবে। যখন শর্করার
পরিমাণ কমে যাবে তখন এটি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এভাবে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা
যাবে।
কুড়ি
পাতা
(Curry leaf):
এর পাতায় থাকা আয়রন, জিংক এবং কপার নামক খনিজ শুধু
অগ্নাশয়ের বিটা-সেল সক্রিয়ই করেনা, পাশাপাশি সেগুলোকে নষ্ট হওয়া থেকেও বাঁচায়। এই
কোষগুলো ইনসুলিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে ৮ - ১০ টি পাতা
চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
নিম
পাতা (Neem
leaf):
নিম পাতা যে কতটা উপকারি তা সবারই জানা আছে। বাড়িতে থাকা নিমগাছ কে
বলা হয় বাড়ির ডাক্তার। সকালবেলা খালি পেটে এক চা চামচ নিম পাতার রস খেলে ঔষধের উপর
নির্ভরতা কমে যাবে।
আম
পাতা (Mango
leaf):
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীকে আম খেতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু
এর পাতা রোগ প্রতিরোধক হিসেবে খুবই উপকারী। এটি অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণের মাত্রা
কমিয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে। আমের পাতা শুকিয়ে পাউডার বানাবেন। খাবার
খাওয়ার এক ঘন্টা আগে পানিতে আধা চামচ পাউডার মিশিয়ে পান করবেন।
তুলসী
পাতা (Basil
leaf):
এটিও কুড়ি পাতার মত অগ্নাশয়ের কোষকে সুস্থ রাখে।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীকে প্রতিদিন সকালে ২ - ৪ টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে উপকার
পাবেন।
পেঁপে
পাতা (Papaya
leaf):
ALT এবং AST এনজাইমের মাত্রা কমিয়ে উপকার করে থাকে। প্রতিদিন সকালে ৮ - ১০ টি পাতা
পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি পান করবেন।
ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এই পাতাগুলো সেবন করতে পারেন। এই পাতাগুলো সেবন করলে আপনি ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করা যায়।
-
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)।